- :-:ব্রেকিং নিউজ:-: -

-:-ব্রেকিং নিউজ-:----দৈনিক ঢাকা.২৪ অনলাইন নিউজ পোর্টালে ইউনিয়ন,উপজেলা,পৌরসভা,জেলা,মহানগর,বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রবাসী পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে।আগ্রহীরা যোগাযোগ করুন। তার নাম ও ছবিসহ নিউজ প্রচার করা হবে।। DHAKA.24(দোহার নবাবগঞ্জ এর খবর)****অভিনন্দন নির্মল রঞ্জন গুহ সভাপতি, আওয়ামী সেচ্ছাসেবকলীগ। আফজাল বাবু সাধারণ সম্পাদক, আওয়ামী সেচ্ছাসেবকলীগ।

ছেলেবেলায় এভাবে লঞ্চে করে গ্রামের বাড়ীতে বেড়াতে যাওয়াটা আমার জন্য ছিল বেশ রোমাঞ্চকর একটা ব্যাপার।






ছেলেবেলায় এভাবে লঞ্চে করে গ্রামের বাড়ীতে বেড়াতে যাওয়াটা আমার জন্য ছিল বেশ রোমাঞ্চকর একটা ব্যাপার। সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে তৈরী হয়ে ঢাকার সদরঘাট থেকে লঞ্চে উঠা। তারপর ৫/৬ ঘন্টার নদী ভ্রমন। লঞ্চের বাড়ান্দার রেলিংয়ে বসা, ছাদে উঠা, লঞ্চের একদম পিছনে গিয়ে ঢেউয়ের খেলা দেখা, অন্যান্য বড় বড় লঞ্চের আসা যাওয়া দেখা, যাত্রীদের নিজ নিজ ঘাটে উঠা নামা করতে দেখা, নদীর আশে-পাশের দৃশ্য দেখা, লঞ্চে কোকাকোলা, ফান্টা, সেভেন-আপ, ঝালমুড়ি, ছোলাবুট, চানাচুর খাওয়া এ সবই আমাকে দারুন আনন্দ দিতো। এখনো সেই কথাগুলো মনে পড়লে মনে দোলা দিয়ে যায়। শাইলকা (বর্তমানে কৈলাল) ঘাট আসলেই ছোট ছোট ডিঙ্গি (কুশা) নৌকা করে আখ/গেন্ডারী/বাঙ্গি/তরমুজ বিক্রি করতো। নদীতে যখন পানি কমে যেত তখন এই শাইলকা পর্যন্ত এসে লঞ্চ পরিবর্তন করতে হতো। কেউ নৌকায়, কেউবা হেঁটে অন্য প্রান্ত থেকে আরেকটি লঞ্চে উঠে বাড়ি যেত। সবচেয়ে বেশি পুলোকিত হতাম তখন যখন একতারা-দোতারা, ডুগডুগি বা খঞ্জনী হাতে কিছু লোকাল বাউল শিল্পীরা লঞ্চের কেবিনে কেবিনে গান গেয়ে শোনাতো কিছু অর্থ পাবার আশায়। এখনো একটা গান আমার স্পষ্ট মনে আছে। গানটা আসলে কোন শিল্পীর তা আমি আজও জানি না। গানটা হলো "প্রথম যেদিন দেখেছি, মনে আপন বুঝেছি, তুমিবীণা বাঁচে না পরাণ"। লঞ্চ ছোটকাল থেকেই আমার খুব ভাল লাগে। এখনো যদি সময় সুযোগ পাই তাহলে কোন না কোন লঞ্চঘাটে গিয়ে লঞ্চ দেখে আসি। ছোটবেলায় গ্রামে গেলে বিকালে আমি লঞ্চঘাটে গিয়ে বসে থাকতাম। ঘাটে কয়টা লঞ্চ আসলো, কোন কোন লঞ্চ আসলো গুনতাম। প্রায় প্রতিটি লঞ্চের নামই আমার মুখস্থ ছিল। এখনো অনেকগুলোর নাম মনে আছে। যেমন নাজিয়া এক্সপ্রেস, গ্রীণ ওয়াটার, মুন্নি এক্সপ্রেস, সারথী এক্সপ্রেস, জনতা এক্সপ্রেস, তুফান মেইল, পঙ্কজ এক্সপ্রেস, চাম্পাতলী এক্সপ্রেস, মারিয়া এক্সপ্রেস, রনি এক্সপ্রেস, গ্লোরী অফ শ্রীনগর, পল্লীমাতা এক্সপ্রেস, নাহার এক্সপ্রেস, বনছায়া এক্সপ্রেস, প্রিন্স অফ বেঙ্গল, হাজী এক্সপ্রেস ১ ২ ৩, তিন তারা এক্সপ্রেস, এম.ভি তায়েফসহ আরও বেশ কয়েকটি লঞ্চ ছিল। ঘাটে লঞ্চ আসলেই তাতে উঠে পড়তাম। বর্ষাকালে কাচারীঘাট পর্যন্ত যেত। অন্যান্য সময় আমাদের বান্দুরাই ছিল শেষ ঘাট। টার্মিনাল থেকে ছেড়ে লঞ্চগুলো নদীর পাড়ে নোঙ্গর করতো। আমি সেটুকু চড়তে পারলেও আনন্দ পেতাম। এভাবে অনেক লঞ্চের সারেং বা কেরাণীদের কাছে আমি বেশ পরিচিত হয়ে উঠি। তারা আমাকে বেশ আদরও করতো। কোন কোন সময় তো সকালে বা দুপুরে ঢাকাগামী লঞ্চে উঠে পড়তাম। ২/৪ ঘাটের পর নেমে আবার ফিরে আসতাম। তারা কোন ভাড়াও নিতো না আমার কাছ থেকে। কখনো যদি মা আমাকে বাড়ীর আশেপাশে খুঁজে না পেতো তাহলে ঠিক বুঝে ফেলতো লঞ্চ ঘাটে গেলেই আমাকে পাওয়া যাবে। বড় ভাইদের পাঠিয়ে দিত আমাকে খোঁজার জন্য। এখন আর লঞ্চে করে গ্রামের বাড়ী যাওয়া হয় না। এখন তো লঞ্চ চলাচলই বন্ধ হয়ে গেছে। কারণ আমাদের ইছমতি নদীটা তার পূর্বের রুপ হারিয়েছে। নদীটা একদম মরে যাচ্ছে। যার জন্য এলাকার মানুষ জনরাই দায়ী। আজও মনে পড়ে সেই নাজিয়াতে চড়ে গ্রামের বাড়ীতে যাওয়া, কিংবা ঢাকায় ফিরে আসা। নাজিয়ার পিছনের সিটে বন্ধুরা দল বেঁধে 29 খেলতে খেলতে আড্ডা দেয়া। নাজিয়ার সেন্টুর হাতের চায়ের কথা আজও মনে পড়ে আমার। নাজিয়ার ছাদে বসে চানাচুর, ঝালমুড়ি, ছোলা বুট খাওয়া। এখন তো শুধু সেই দিনগুলোকে মিস করা ছাড়া আর কিছুই করার নেই। যোগাযোগ ব্যবস্থা এখন অনেক উন্নত হয়েছে। এখন বাসে করে মাত্র দেড় থেকে দুই ঘন্টায় বাড়ী চলে যাওয়া যায়। এখন তো এসি বাসও চলে আমাদের গুলিস্থান-বান্দুরা রুটে। তবে খুব মিস করি লঞ্চে করে বাড়ী যাবার সেই দিনগুলোকে.........

credit by:লেখা- দোলন গমেজ।

ছবি- সংগৃহীত.........

No comments

Powered by Blogger.